# নিজস্ব প্রতিবেদক :-
কিশোরগঞ্জের অর্ধ লক্ষাধিক ক্ষুদ্র ও ভাসমান সিগারেট বিক্রেতার ওপর লাইসেন্স আরোপ না করার দাবিতে জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির সমিতি বাংলাদেশ (নাসিব) জেলা শাখা সংবাদ সম্মেলন করেছে। আজ ১ আগস্ট সোমবার সকালে জেলা সদরের অতিথি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা নাসিব সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মদ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকার তামাকজাত পণ্য নিয়ন্ত্রণের যে উদ্যোগ গ্রহণ করবে, তাকে ব্যবসায়ীরা স্বাগত জানাবে। কিন্তু অতিসম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) অধিকতর সংশোধনায়নের লক্ষ্যে প্রস্তুতকৃত খসড়ায় বেশ কিছু ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা নি¤œ আয়ের খুচরা বিক্রেতা জনগোষ্ঠীর দৈনন্দিন জীবিকা নির্বাহের জন্য হুমকিস্বরূপ। বর্তমানে বৈধ পণ্য হিসেবে সিগারেট বা তামাকজাত দ্রব্য অনেক ভাসমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিক্রি করে সংসার চালান। তারা পানের সঙ্গে বা ফ্লাস্কে চা বিক্রির সঙ্গে কিছু সিগারেটও বিক্রি করে থাকেন। কিন্তু সরকার তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় সকল সিগারেট বিক্রেতার লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে খসড়া আইন প্রণয়ন করেছে। এর ফলে যারা ২০০ টাকা পুঁজি নিয়ে ভাসমান ব্যবসা করছেন, বা খোলা জায়গায় ছোট্ট চায়ের দোকানে কয়েকটি সিগারেট বিক্রি করছেন, তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন। এই আইনের ফলে দেশের ১৫ লক্ষ প্রান্তিক নি¤œ আয়ের খুচরা ও ভাসমান বিক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ জেলায়ও অন্তত অর্ধ লক্ষাধিক এরকম ছোট ও ভাসমান ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা এসব ব্যবসা করতে না পারলে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়বেন। কাজেই তাদেরকে এই লাইসেন্স গ্রহণের আওতার বাইরে রাখার জন্য সংবাদ সম্মেলনে সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আইনে খুচরা শলাকা বিক্রয় নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে যা বাংলাদেশে বাস্তবসম্মত নয়। কারণ বেশিরভাগই হতদরিদ্র খুচরা বিক্রেতা। তারা খুচরা শলাকা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকাসহ এই উপমহাদেশের কোথাও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে এরকম অবাস্তব বিধান নেই। এছাড়া তামাকপণ্য যেহেতু সরকার কর্তৃক বৈধ পণ্য, ফলে এসব দ্রব্য বা প্যাকেট দৃশ্যমান রাখা জরুরি। এসব প্যাকেট আড়ালে রাখলে নকল পণ্যে বাজার ছেয়ে যাবে। এতে সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব হারাবে। এছাড়া খসড়া আইনানুযায়ী ফেরি করে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করলেও ভাসমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আয় কমে যাবে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
জেলা নাসিবের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আলাউদ্দিনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি দৈনিক শতাব্দীর কণ্ঠের সম্পাদক আহমেদ উল্লাহ, বিশেষ অতিথি জেলা পোল্ট্রি ফিড ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সামছুল ইসলাম খান মাসুম ও জেলা চেম্বারের সহ-সভাপতি ইকবাল আহমেদ চৌধুরী অপু বক্তব্য রাখেন। শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন জেলা চেম্বারের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নাসিবের সহ-সভাপতি মো. মুজিবুর রহমান বেলাল।
আপনার মতামত লিখুন :