করিমগঞ্জে বালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক বরখাস্ত নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ


admin প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১১, ২০২২, ৭:৩৯ পূর্বাহ্ন /
করিমগঞ্জে বালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক বরখাস্ত নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

# নিজস্ব প্রতিবেদক :-
করিমগঞ্জে একটি হাইস্কুলের গণিতের সহকারী শিক্ষককে এডহক কমিটি কর্তৃক সাময়িক বরখাস্ত নিয়ে করা হচ্ছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। ভিকটিম বলছেন, সামনে পূর্ণাঙ্গ ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন। ফলে বর্তমান সভাপতি মো. মাসুদুজ্জামান রতনের বিপক্ষের ভোটার ভেবে একটি সাজানো ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, যেন তিনি ভোট দিতে না পারেন। কামরুল ইসলাম নামে ওই শিক্ষক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রতিকার চেয়ে ১০ অক্টোবরের স্বাক্ষরে লিখিত আবেদন করেছেন।
কামরুল ইসলাম করিমগঞ্জের বালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১২ সাল থেকে শিক্ষকতা করছেন। বিদ্যালয়ে বর্তমানে কোন পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা কমিটি নেই। চলছে এডহক কমিটি দিয়ে। প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম তাকে বিদ্যালয় পরিচালনায় বিশৃংখলা সৃষ্টি ও ইন্দনদাতা হিসেবে উল্লেখ করে গত ৮ সেপ্টেম্বর একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। কামরুল ইসলাম ১৪ সেপ্টেম্বর নোটিশের জবাব দেন। ২১ সেপ্টেম্বর এডহক কমিটির সভায় কামরুল ইসলামের কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক নয় মর্মে তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সামনেই পূর্ণাঙ্গ ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন। সেই নির্বাচনে বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি মো. মাসুদুজ্জামান রতন প্রার্থী হবেন। তিনি যে কোন কারণেই হোক, শিক্ষক কামরুল ইসলামকে বিপক্ষের ভোটার ধরে নিয়েছেন। সালমা আক্তার নামে কম্পিউটারের সহকারী শিক্ষককেও বিপক্ষের ভোটার মনে করছেন। যে কারণে এডহক কমিটি উদ্দেশ্যমূলক যুক্তি তৈরি করে দু’জনকেই সাময়িক বরখাস্ত করেছেন, যেন তারা আসন্ন নির্বাচনে ভোট দিতে না পারেন এবং সুবিধামত ভোটার তালিকা তৈরি করে মাসুদুজ্জামান নির্বিঘেœ পাস করে যেতে পারেন। কামরুল ইসলাম আরও জানান, সভাপতি মাসুদুজ্জামান কিছুদিন আগে তার কাছে নিজের প্রার্থিতার একটি মনোনয়ন ফরমে স্বাক্ষর নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যেখানে প্রিসাইডিং অফিসারই নিয়োগ হয়নি, নির্বাচনী তফসিলই ঘোষিত হয়নি, সেখানে মনোনয়ন ফরমে স্বাক্ষর দিতে কামরুল ইসলাম অসম্মতি জানান। সেই কারণেই মূলত কামরুল ইসলামের ওপর সভাপতি ক্ষিপ্ত ছিলেন। এসব কারণেই একটি সাজানো ঘটনা তৈরি করে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামকে প্রশ্ন করলে বলেন, কামরুল ইসলাম কিছুদিন আগে তার ওপর হামলা করতে চেয়েছিলেন। এ ব্যাপারে থানায় জিডি করা আছে। কমিটি তদন্ত করে এর সত্যতা পেয়েই বরখাস্ত করেছে। কাজেই কামরুল ইসলামের বক্তব্য সঠিক নয়। তিনি জানান, গত জুলাই মাস থেকে এডহক কমিটি কাজ করছে। আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হবে। কোন শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত হলে স্বাভাবিক নিয়মেই তিনি ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবেন বলেও তিনি জানান। এদিকে এডহক কমিটর সভাপতি মাসুদুজ্জামানকে প্রশ্ন করলে বলেন, আমার সভাপতি পদে নির্বাচন করার সম্ভাবনা নেই। এছাড়া মনোনয়ন ফরম তৈরিই করা হয়নি। কাজেই তাতে স্বাক্ষর নেয়ারও প্রশ্ন ওঠে না। প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দরখাস্ত করা হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ হলে এডহক কমিটি কোন রকম নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না। তিনি বলেন, শিক্ষক কামরুল ইসলাম প্রধান শিক্ষককে হামলার চেষ্টা করলে থানায় জিডি করা হয়। এর ভিত্তিতেই মূলত তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন তিনি এ বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করতে থাকলে আরও কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে বলে সভাপতি মাসুদুজ্জামান মন্তব্য করেছেন।